অ্যান্টিবডি (Antibody)
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অ্যান্টিবডির ভূমিকা
(Role of Antibody in Immune System)
দেহের প্রতিরক্ষাতন্ত্র (immune system) থেকে উৎপন্ন এক ধরনের দ্রবণীয় গ্লাইকোপ্রোটিন যা রোগ-ব্যাধি সৃষ্টিকারী নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনকে (যেমন- ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া) ধ্বংস করে তাকে অ্যান্টিবডি বলে। প্রত্যেকটি অ্যান্টিবডি হচ্ছে ইমিউনোগ্লোবিউলিন (সংক্ষেপে Ig) নামে বিশেষ ধরনের একেকটি প্রোটিন অণু। প্লাজমা কোষ থেকে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হয়। মানুষের দেহে প্রায় ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ধরনের অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হতে পারে।
অ্যান্টিবডির গঠন (Structure of Antibody)
প্রত্যেক অ্যান্টিবডির মৌলিক গঠন এক গাঠনিক অংশগুলো নিম্নরূপ:
১. ভারী ও হালকা শৃঙ্খল (Heavy and light chains): প্রত্যেক অ্যান্টিবডিতে দুজোড়া পলিপেপটাইড শৃঙ্খল থাকে। এর মধ্যে সদৃশ একজোড়া লম্বা ও ভারী শৃঙ্খল এবং অন্য জোড়া সদৃশ হালকা শৃঙ্খল। ভারী ও হালকা শৃঙ্খলের আণবিক ওজন হচ্ছে যথাক্রমে ৫০-৭০ kD ও ২৩ kD (kiloDaltons)।
২. ডাইসালফাইড বন্ড (Disulfide bonds): প্রত্যেক অ্যান্টিবডিতে অন্তত ৩টি আন্তঃশৃঙ্খল ডাইসালফাইড বন্ড রয়েছে। একটি বড় থাকে দুই-ভারী শৃঙ্খলের মাঝে, বাকি দুটি থাকে দুপাশে ভারী ও হালকা শৃঙ্খলের মাঝে। অ্যান্টিবডির গড়ন দেখতে Y আকৃতির মতো। আন্তঃশৃঙ্খল ডাইসালফাইড বন্ডের সংখ্যা বিভিন্ন অ্যান্টিবডিতে বিভিন্ন হতে পারে। প্রত্যেকটি পলিপেপটাইড শৃঙ্খল আবার অন্তঃস্থভাবে অন্তশৃঙ্খল (intra-chain) ডাইসালফাইড বন্ডে যুক্ত থাকে।
৩. স্থায়ী ও পরিবর্তনশীল অঞ্চল (Constant and variable regions): প্রত্যেক অ্যান্টিবডি দুই অঞ্চলবিশিষ্ট গঠনে নির্মিত একটি স্থায়ী অঞ্চল, অন্যটি পরিবর্তনশীল অঞ্চল। ধরন অনুযায়ী প্রত্যেক অ্যান্টিবডির ভারী ও হালকা শৃঙ্খলে অ্যামিনো এসিড ক্রম (sequence) অনুযায়ী ওই দুটি অঞ্চলে ভাগ করা যায়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট ধরনের মিউনোগ্লোবিনের (যেমন-IgG-তে কিংবা IgA-তে) স্থায়ী অঞ্চলে অ্যামিনো এসিড ক্রম একই থাকে। কিন্তু পরিবর্তনশীল অংশকে অ্যান্টিজেন (জীবাণু) ধরার জন্য আকৃতির পরিবর্তন ঘটিয়ে খাপ খাওয়াতে হয় বলে ক্রমের পরিবর্তন হতে পারে। পরিবর্তনশীল অঞ্চল নির্মাণে ভারী ও হালকা উভয় শৃঙ্খলই অংশ গ্রহণ করে। অ্যান্টিজেন ধরার এ অংশটির নাম প্যারাটপ (paratope)। এটি তালা-চাবি (lock and key) পদ্ধতিতে কাজ করে। এক্ষেত্রে ‘চাবি’ হচ্ছে প্যারাটপ, আর ‘তালা’ অ্যান্টিজেন (জীবাণু)।
ভারী শৃঙ্খলের স্থায়ী অঞ্চলে অ্যামিনো এসিডের ক্রম-এর ভিত্তিতে অ্যান্টিবডি মাত্র ৫ ধরনের হলেও পরিবর্তনশীল অঞ্চলের (ভারী ও হালকা শৃঙ্খলের) প্যারাটপে যখন জরুরী অবস্থায় বিশেষ বিশেষ জিনখন্ডের (subgene) এলোপাথাড়ি (random) সম্মিলনের ফলে পরিবর্তন ঘটে তখন কোটি কোটি ভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবডির সৃষ্টি হয়। [এ প্রক্রিয়ার নাম VDJ রিকম্বিনেশন। V=Variable, D = diversity, J = Joining subgene] বিজ্ঞানীদের ধারণা মানুষের দেহে প্রায় ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ধরনের অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হতে পারে। আমাদের জীবদ্দশায় ১০ কোটি অ্যান্টিজেন দেহে প্রবেশ করবে বা করতে পারে তা অকল্পনীয়।৪. কব্জা অঞ্চল (Hinge region): অ্যান্টিবডি অণুর বাহুদুটি যে সংযোগস্থল থেকে দুভাগ হয়ে যায় তা কব্জা অঞ্চল। অংশটি অ্যান্টিবডিকে কিছুটা নমনীয়তা দান করে। বাহুদুটির দুপ্রান্তে অবস্থিত একটি করে মোট দুটি প্যারাটপে দুটি অ্যান্টিজেনকে আটক করা যায়।
অ্যান্টিবডির প্রকারভেদ (Types of Antibody):
অ্যান্টিবডির গড়নে যে ভারী শৃঙ্খল রয়েছে তাতে অ্যামিনো এসিডের ক্রমের (sequence) ভিত্তিতে ভারী শৃঙ্খল ৫ ধরনের: -(gamma), -(alpha), -(mu), -(epsilon) এবং δ-(delta)।
১. ইমিউনোগ্লোবিউলিন G (IgG): দেহের মোট ইমিউনোগ্লোবিউলিনের (Ig) 75% IgG। রক্ত, লসিকা, অস্ত্র ও টিস্যু তরলে এ Ig বিস্তৃত থাকে। কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমিক সক্রিয় করে এবং অনেক বিষাক্ত পদার্থকে প্রশমিত করে। IgG ই একমাত্র অ্যান্টিবডি যা গর্ভাবস্থায় অমরা অতিক্রম করে মায়ের অর্জিত পরিমাকে ভ্রুণদেহে বাহিত করে।
২. ইমিউনোগ্লোবিউলিন A (IgA): দেহের মোট Ig-র মধ্যে ১৫% হচ্ছে IgA। এ ধরনের অ্যান্টিবডি মিউকাস ঝিল্লিতে আবৃত থাকে, যেমন-পরিপাক, জনন ও শ্বসনতন্ত্রে বিস্তৃত হয় এবং সেখানে রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব ও অণুকণাকে প্রশমিত করে। মায়ের দুধেও IgA পাওয়া যায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় শিশুদেহে স্থানান্তরিত হয়।
৩. ইমিউনোগ্লোবিউলিন M (IgM): দেহের মোট Ig-এর ৫-১০% IgM। ABO ব্লাড গ্রুপের রক্তকণিকার অ্যান্টিবডি এ ধরনের IgM পাওয়া যায় রক্ত ও লসিকায়। এটি কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমকে সক্রিয় করে এবং বহিরাগত কোষকে পরস্পরের সঙ্গে আসঞ্জিত করে দেয়। অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া ও কিছু ভাইরাসের বিরুদ্ধে স্পেসিফিক ইমিউন সাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে IgG ও IgM একত্রে কাজ করে।
৪. ইমিউনোগ্লোবিউলিন D (IgD): দেহের মোট Ig-র মধ্যে ১%-এরও কম হচ্ছে IgD। রক্ত, লসিকা ও লিম্ফোসাইট B-কোষে এ Ig পাওয়া যায়। এর কাজ অজ্ঞাত হলেও বিজ্ঞানিদের ধারণা, IgD B– কোষকে সক্রিয়করণে ভূমিকা পালন করে।
৫. ইমিউনোগ্লোবিউলিন E (IgE): দেহের মোট Ig-র মধ্যে প্রায় ০.১% হচ্ছে lgE। এটি দুর্লভ Ig। B–কোষ, মাস্টকোষ ও বেসোফিলে এ Ig পাওয়া যায়। হিস্টামিন ক্ষরণকে উদীপ্ত করে এটি প্রদাহ সাড়া (inflammatory response) সক্রিয় করে। বিভিন্ন অ্যালার্জিক সাড়া দানে (যেমন-সন্ধিবাতে) এ অ্যান্টিবডির ভূমিকা বেশ নেতিবাচক প্রমাণিত হয়েছে।
অ্যান্টিবডির কার্যপদ্ধতি (Functional System of Antibody):
অ্যান্টিবডির কাজের পদ্ধতিকে ৩টি প্রধান শিরোনামভুক্ত করা যায়:
১. অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ আক্রমণ,
২. কমপ্লিমেন্ট প্রোটিন সক্রিয়করণ এবং
৩. সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধ।
১. অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ আক্রমণ (Direct attack against antigen):
স্তূপীকরণ বা অ্যাগ্লুটিনেশন (Agglutination): যে প্রক্রিয়ায় রক্ত বা লসিকায় সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডির মধ্যে বিক্রিয়ার ফলে রোগ সৃষ্টিকারী বহিরাগত অণুজীব বা অণুকণা দলা পাকিয়ে নিশ্চল ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে তাকে স্তূপীকরণ বলে। প্রত্যেক অ্যান্টিবডিতে দুটি করে অ্যান্টিজেন-বাঁধনস্থল থাকে, অতএব একটি অ্যান্টিবডি দুটি অ্যান্টিজেনকে আটকাতে পারে। এভাবে অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেনের পারস্পরিক বিক্রিয়ায় একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দলা পাকিয়ে নিশ্চল বড় স্তূপের মতো পড়ে থাকে। ফলে খুব সহজেই ম্যাক্রোফেজ ও নিউট্রোফিল নামক শ্বেত রক্তকণিকা ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় তা গ্রাস করে।
অধঃক্ষেপন (Precipitation): যে প্রক্রিয়ায় দ্রবণীয় অ্যান্টিজেনের (যেমন- টিটেনাস টক্সিন) আণবিক যৌগ প্রিসিপিটিন (precipitin) অ্যান্টিবডির সঙ্গে বিক্রিয়ার ফলে বড় জালিকাকার ও অদ্রবণীয় বস্তু হিসেবে অধঃক্ষিপ্ত হয় তাকে অধঃক্ষেপণ বলে। অধঃক্ষিপ্ত অ্যান্টিজেন অ্যান্টিবডি দলাকে খুব সহজে ফ্যাগোসাইটিক কোষ গ্রাস করে দেহকে রোগমুক্ত রাখে।
প্রশমন (Neutralization): যে প্রক্রিয়ায় একটি অ্যান্টিবডি কোনো অ্যান্টিজেনের ক্ষতিকারক অংশগুলোকে ঢেকে রেখে ক্ষতিকর বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে বাধা দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে দেয় কিংবা অ্যান্টিজেন-ক্ষরিত টক্সিনের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে তার বিষক্রিয়া থেকে অন্যান্য দেহকোষকে রক্ষা করে তাকে প্রশমন বলে।
বিশ্লিষ্টকরণ (Lysis): কিছু শক্তিশালী অ্যান্টিবডি যে প্রক্রিয়ায় সরাসরি বহিরাগত অণুজীবের ঝিল্লি আক্রমণ ও বিদীর্ণ করার মধ্য দিয়ে অণুজীবের দেহকে ফাটিয়ে ছিন্নভিন্ন করে দেয় তাকে বিশ্লিষ্টকরণ বলে।
২. কমপ্লিমেন্ট প্রোটিন সক্রিয়করণ (Complementary protein activation):
অন্তত ২০ ধরনের প্লাজমা প্রোটিনে গঠিত এমন একটি আন্তঃসম্পর্কিত গ্রুপ যা নিষ্ক্রিয়ভাবে রক্তে সংবহিত হয়ে বিভিন্ন প্রতিরক্ষা পদ্ধতিকে সাহায্য করে তাকে কমপ্লিমেন্ট সিস্টেম বা কমপ্লিমেন্ট বলে। অ্যান্টিবডির কাজের ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত। কমপ্লিমেন্ট প্রোটিন সক্রিয়করণের মাধ্যমে নিম্নোক্ত বিভিন্ন উপায়ে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ় থাকে।
অপসোনাইজেশন (Opsonization): দেহে অনুপ্রবিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার গায়ে অ্যান্টিজেন অ্যান্টিবডি কমপ্লেক্স যুক্ত হলে কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রোটিন নিউট্রোফিল ও ম্যাক্রোফেজকে প্রচন্ডভাবে ফ্যাগোসাইটোসিসে উদ্বুদ্ধ করে তুলে। এ প্রক্রিয়াকে অপসোনাইজেশন বলে। এভাবে কম সময়ে শতগুণ বেশি সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া গ্রাসে ফ্যাগোসাইটগুলো ভূমিকা পালন করে।
বিশ্লিষ্টকরণ (Lysis): কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অনেক ধরনের কমপ্লিমেন্টে গঠিত লাইটিক কমপ্লেক্স (lytic complex) নামে একটি বিশেষ গ্রুপ। এ গ্রুপভুক্ত কমপ্লিমেন্ট বহিরাগত ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য অণুজীবের কোষঝিল্লি বিদারণের মাধ্যমে অণুজীব ধ্বংসে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে।
স্তূপীকরণ (Agglutination): কমপ্লিমেন্ট থেকে উৎপন্ন পদার্থের বিক্রিয়ায় বহিরাগত অণুজীবের ঝিল্লি এমনভাবে পরিবর্তিত হয় যার ফলে অণুজীবগুলো পরস্পর সংলগ্ন হয়ে নিষ্ক্রিয় নিশ্চল স্তুপের মতো পড়ে থাকে।
ভাইরাসের প্রশমন (Neutralization of Viruses): কমপ্লিমেন্ট থেকে ক্ষরিত এনজাইম ও অন্যান্য পদার্থ ভাইরাসের গঠনকে আক্রমণ করে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
কেমোট্যাক্সিস (Chemotaxis): অণুজীবের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তকণিকা, টিস্যু, রক্তজমাট ও ব্যাকটেরিয়ার নানা রাসায়নিক ক্ষরণে উদ্দীপ্ত হয়ে ফ্যাগোসাইটগুলো সেখানে (ক্ষতস্থানে) ধাবিত হয়। এভাবে রাসায়নিক সংবেদের প্রতি সাড়া দেয়াকে কেমোট্যাক্সিস বলে। কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমের কিছু প্রোটিন ফ্যাগোসাইটকে কেমোট্যাক্সিসের প্রতি সাড়া দিতে আকৃষ্ট করায় গন্তব্যে পৌঁছে ফ্যাগোসাইট কমপ্লিমেন্টের সহযোগিতায় অনুপ্রবেশকারী ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করতে পারে।
মাস্টকোষ ও বেসোফিলের সক্রিয়করণ (Activation of Mast-cells and Basophils): কমপ্লিমেন্ট সিস্টেমের কিছু প্রোটিন মাস্টকোষ ও বেসোফিলকে আশপাশের তরলে হিস্টামিন, হেপারিন ও অন্যান্য পদার্থ ক্ষরণে উদ্দীপ্ত করে। ফলে স্থানীয় রক্তপ্রবাহ, টিস্যুতে তরল পদার্থ ও প্লাজমা প্রোটিনের প্রবেশ এবং স্থানীয় টিস্যুর বিক্রিয়া বেড়ে যায়। এসব কারণে সৃষ্ট প্রদাহ সাড়ায় জীবাণু নিশ্চল ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
৩. সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধ (Preventing the spread of infection):
কিছু অ্যান্টিবডি, বিশেষ করে IgE প্রদাহ সাড়ার বিষয়টি ত্বরান্বিত করে। যে কোনো ক্ষতস্থানে প্রদাহের যে ৪টি মৌলিক ও ধারাবাহিক বাহ্যিক লক্ষণ প্রকাশিত হয় তা হচ্ছে:
ক্ষতস্থানটি লাল হয়ে যায়
জায়গাটি গরম হয়;
ফুলে যায় এবং
সবশেষে ব্যথার প্রকাশ ঘটায়।
প্রদাহের কারণে ক্ষতস্থানে এমনভাবে পরিবর্তন ঘটে যার ফলে বহিরাগত জীবাণু আর ছড়াতে পারে না। এভাবে মাস্টকোষ ও বেসোফিলের ক্ষরণে প্রদাহ সৃষ্টি হয়ে সংক্রমণের বিস্তার রুদ্ধ করে দেয়।
অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন এর মধ্যে পার্থক্য
(Difference between Antibody & Antigen)
অ্যান্টিবডি | অ্যান্টিজেন |
১. অ্যান্টিবডি বহিরাগত ক্ষতিকর বস্তুর (অ্যান্টিজেন) উপস্থিতি ও মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্ট প্রতিরোধী বস্তু। | ১. অ্যান্টিজেন বহিরাগত বস্তু যা প্যাথোজেন নামে পরিচিত এবং পোষকের দেহে অনুপ্রবেশ করে। |
২. অ্যান্টিবডি রাসায়নিক প্রকৃতিতে কেবলমাত্র প্রোটিন। | ২. অ্যান্টিজেন রাসায়নিক প্রকৃতিতে প্রোটিন, পলিস্যাকারাইড এবং গ্লাইকোপ্রোটিন। পরাগরেণু, ডিমের সাদা অংশ, রক্তকণিকা ইত্যাদিও অ্যান্টিজেন বলে বিবেচিত হয়। |
৩. অ্যান্টিবডি অধিকাংশ সময় প্লাজমায় অবস্থান করে। | ৩. অবস্থানগতভাবে অ্যান্টিজেন লোহিত কণিকার উপরিতলে বা অণুজীবের উপরিতলে অবস্থিত। |
৪. অ্যান্টিজেনের উপস্থিতিতেই কেবল অ্যান্টিবডির সৃষ্টি হয়। এর স্বকীয় কোন উপস্থিতি নেই। | ৪. অ্যান্টিজেনের সক্রিয় অবস্থান রয়েছে এরা মূলত অণুজীব বা প্রকৃত বস্তু। |
৫. জীবদেহ রক্ষায় অ্যান্টিবডি ভূমিকা পালন করে। এগুলো রক্ষণাত্মক। | ৫. জীবদেহে অনাক্রম্যতা সৃষ্টিতে অ্যান্টিজেন উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। এগুলো ধ্বংসাত্মক। |
আরও দেখুন...